অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায় জেনে নিন
অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে জানার জন্য আপনারা হয়তো বিভিন্ন তথ্য খোঁজাখুঁজি করছেন কিন্তু পাচ্ছেন না তাহলে আমার এই পোস্টেটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
এই পোস্টটিতে অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায় জানতে পারবেন এবং তার সাথে আপনারা আরো অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ভূমিকা:
এই অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায় আমাদের বেশি তরল খাবার খেতে হবে। গরমে প্রচুর সবজি খেতে পারেন। শসা, টমেটো, ক্যাপসিকাম, লাউ, শাক-পাতা আপনার খাদ্যতালিকায় রাখুন। উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবারের পরিবর্তে অল্প অল্প খান। এ ছাড়া সূর্যের আলোয় সরাসরি যাওয়ার পরিবর্তে মাথায় ছাতা, টুপি, পায়ে জুতা-স্যান্ডেল ব্যবহার করুন। কিছু সময় শীতাতপ নিয়ন্তিত এলাকায় থাকার চেষ্টা করুন।
গরমে ঠান্ডা থাকার উপায়:
তীব্র গরমে যেভাবে ঠান্ডা থাকতে পারেন তা জেনে নিন
গ্রীষ্মকাল অনেকের কাছে পছন্দের হতে পারে, কিন্তু তাপপ্রবাহ আমাদের শরীরের জন্য অনেক সময় ক্ষতির কারণও হতে পারে। তাই এই তাপপ্র্রবাহে সুস্থ থাকতে যা করবেন -
- গরমে হালকা খাবার খান
- আরামদায়ক পোশাক পরুন
- নিয়মিত গোসল করুন
- রোদ থেকে চোখকে রক্ষা করুন
- বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন
- মদ্যপান ও ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুন
- কিছু সময় শীতাতপ নিয়ন্তিত এলাকায় থাকার চেষ্টা করুন
গরমে সুস্থ থাকার ১৪ উপায়:
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এই তীব্র গরমে নিজেকে সুস্থ রাখা জরুরি। গরমে সুস্থ থাকতে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, তীব্র গরমে স্বাস্থ্যের ওপরে যে প্রভাব পড়ে, এতে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া হিটস্ট্রোকের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এ গরমে কী করতে পারেন, সে পরামর্শগুলো দেখে নিতে পারেন।
১. সরাসরি রোদে যাওয়া থেকে বা অধিক পরিশ্রম থেকে বিরত থাকুন। বিশেষ করে বেলা ১১টা থেকে তিনটা পর্যন্ত সরাসরি রোদে যাবেন না। এই সময়টা দিনের সবচেয়ে বেশি গরম থাকে।
২.সূর্যের আলো থেকে চোখ সুরক্ষার জন্য রোদচশমা ব্যবহার করুন। এ ছাড়া সূর্যের আলোয় সরাসরি যাওয়ার পরিবর্তে মাথায় ছাতা, টুপি, পায়ে জুতা-স্যান্ডেল ব্যবহার করুন।
৩. তৃষ্ণা না পেলেও প্রচুর পানি পান করুন। পানি ছাড়াও ডাব, জুস, লাচ্ছি, লেবুপানি, দই প্রভৃতি খেতে পারেন। এতে শরীর ঠান্ডা থাকবে।
৪. উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবারের পরিবর্তে অল্প অল্প খান।
৫. কোথাও যাওয়ার আগে সঙ্গে পানি অবশ্যই নেবেন।
৬. সুযোগ থাকলে একাধিকবার গোসল করতে পারেন। বিশেষ করে, ঘুমানোর আগে গোসল করে দিলে শরীরের তাপমাত্রা কম থাকবে।
৭. হালকা, ঢিলেঢালা ও হালকা রঙের সুতি কাপড় পরবেন।
৮. ঘর যাতে ঠান্ডা থাকে এবং ঘরে যাতে বাতাস প্রবেশ করতে পারে, সে সুযোগ রাখবেন।
৯. কারও যদি শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, দুর্বলতা ও মাথা ঝিমঝিম করে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
১০. গরমের দিনে খাবার সামান্য এদিক-ওদিক হলেই পেটব্যথা হয়, পেট কামড়ায়, হজমে গোলমাল দেখা দেয়। বাইরের খাবার খাওয়ার আগে সচেতন থাকুন।
১১. গরমে আর ক্লান্তিতে বাইরের খোলা খাবার ও পানীয় গ্রহণের হার বেড়ে যায়। তার ওপর গরমে সহজেই খাদ্যদ্রব্য দূষিত হয়। বাড়ে মাছি ও পোকামাকড়ের বিস্তার, যা রোগবালাই ছড়াতে সাহায্য করে। এসবের ফলে বাড়ে পানি ও খাবারবাহিত রোগের প্রকোপ। এর মধ্যে একটি বড় সমস্যা হলো জন্ডিস। জন্ডিস থেকে বাঁচতে, বিশেষ করে রাস্তার খোলা খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
১২. গ্রীষ্মের অতিরিক্ত গরমে ঘামাচির সমস্যা বাড়ে। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অতিরিক্ত গরমে প্রচুর পানি পান করা উচিত। প্রতিদিন কমপক্ষে দুবার গোসল করা প্রয়োজন। প্রতিদিন অন্তত একবার গোসলের সময় সাবান মাখতে হবে। ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে।
১৩. গরমের সময়ের একটি মারাত্মক স্বাস্থ্যগত সমস্যার নাম হিটস্ট্রোক। চিকিৎসাশাস্ত্র অনুযায়ী, প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ায় শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে তাকে হিটস্ট্রোক বলে। হিটস্ট্রোক এড়াতে যথাসম্ভব ঘরের ভেতরে বা ছায়াযুক্ত স্থানে থাকুন। পানির সঙ্গে সঙ্গে লবণযুক্ত পানীয়, যেমন: খাবার স্যালাইন, ফলের রস, লাচ্ছি ইত্যাদিও পান করতে হবে। তাপমাত্রা বৃদ্ধিকারী পানীয়, যেমন: চা ও কফি যথাসম্ভব কম পান করা উচিত।
১৪. গরমে প্রচুর সবজি খেতে পারেন। শসা, টমেটো, ক্যাপসিকাম, লাউ, শাক-পাতা আপনার খাদ্যতালিকায় রাখুন।
অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার দোয়া:
সারাদেশেই চলছে তীব্র তাপদাহ। তাপদাহের কারণে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর অতিরিক্ত গরমের ফলে ডায়রিয়া, ঠান্ডা-কাশিসহ অনেক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নানা বয়সি মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে বাঁচার জন্য রাসুল (সা.) আমাদের বিভিন্ন দোয়া শিখিয়েছেন।
হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে- আবু জার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এক সফরে আমরা আল্লাহর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে ছিলাম। এক সময় মুয়াজ্জিন জোহরের আজান দিতে চেয়েছিল। তখন নবিজি (সা.) বলেন, গরম কমতে দাও। কিছুক্ষণ পর আবার মুয়াজ্জিন আজান দিতে চাইলে নবিজি পুনরায় বলেন, গরম কমতে দাও।
এভাবে তিনি (নামাজ আদায়ে) এত বিলম্ব করলেন যে, আমরা টিলাগুলোর ছায়া দেখতে পেলাম। এরপর নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, গরমের প্রচণ্ডতা হয় জাহান্নামের উত্তাপ হতে। কাজেই গরম প্রচণ্ড হলে উত্তাপ কমার পর নামাজ আদায় কর। (বোখারি ৫৩৯)।
তীব্র গরম থেকে বাঁচার দোয়া:
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন যাওয়ালি নি'মাতিকা ওয়া তাহাওউলি আফিয়াতিকা ওয়া ফুজাআতি নিক্বমাতিকা ওয়া জামি'য়ি সাখাত্বিকা।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই আপনার নিয়ামতের বিলুপ্তি, আপনার অনুকম্পার পরিবর্তন, আকস্মিক শাস্তি এবং আপনার সমস্ত ক্রোধ থেকে।
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাস কিনা গাইসান মুগিসান মুরিয়্যান নাফিয়ান গাইরা দাররিন আজিলান গাইরা আজিলিন।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমাদেরকে বিলম্বে নয় বরং তাড়াতাড়ি ক্ষতিমুক্ত-কল্যাণময়, তৃপ্তিদায়ক, সজীবতা দানকারী, মুষল ধারায় বৃষ্টি বর্ষণ করুন।
অতিরিক্ত গরমে কি কি সমস্যা হয়:
গরমে সবথেকে বেশি যে সমস্যা হয় সেটা হলো পানিশূন্যতা। তীব্র গরমে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যায়। অতিরিক্ত গরমের কারণে যখন মানুষের শরীরের তাপমাত্রা-নিয়ন্ত্রকগুলোর কার্যক্ষমতা কমে যায়, তখন ক্লান্তি, মাথাব্যথা, জ্বর ইত্যাদি নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়াও প্রচণ্ড গরমে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টের রোগ, নিউমোনিয়া, পানিবাহিত টাইফয়েড ও জন্ডিস এবং চর্ম রোগ বা ফুসকুাড়র প্রকোপ অনেক বেড়ে যায়। অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেলে তাকে হিট স্ট্রোক বলা হয়। এর ফলে ঘাম বন্ধ হয়ে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করে।
শরীরের অতিরিক্ত গরম প্রতিরোধের উপায়:
যথেষ্ট বিশ্রাম নিতে হবে। গরমের সময় ঘামের কারণে শরীর থেকে যে লবণ-পানি বের হয়ে যায় তার ঘাটতি পূরণের জন্য অতিরিক্ত তরল পান করতে হবে। তাই গ্রীষ্মকালীন ফল দিয়ে তৈরি তাজা জুস, ডাবের পানি, লবণ- চিনির শরবত, স্যালাইনের পানি বারে বারে খেতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে প্রস্রাবের গাঢ় রং পানি স্বল্পতার লক্ষণ।
লেখকের মন্তব্য:
এই পেস্টটিতে অতিরিক্ত গরমে ঠান্ডা থাকার উপায় গরমে সুস্থ থাকার উপায় এবং অতিরিক্ত গরম থেকে বাচাঁর দোয়া এই সব সর্ম্পকে বলা হয়েছে। আমার এই পেস্টটি পড়ে ভালো লাগলে একটি কমেন্ট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url